আন্তর্জাতিক

‘আফগানিস্তানে সেনা পাঠালে ফল ভালো হবে না’, ভারতের প্রশংসার সাথে হুশিয়ারি তালিবান মুখপাত্রের

টিডিএন বাংলা ডেস্ক :  ভারতের মানবিক এবং উন্নয়নমূলক সাহায্যের প্রশংসা করেও হুমকির সুরে ভারত আফগানিস্তানে সেনা পাঠালে ফল ভাল হবে না , এমনটাই হুঁশিয়ারি দিল তালিবানের মুখপাত্র মহঃ সুহেল শাহিন। সংবাদসংস্থা এএনআইকে একথা জানিয়েছে তিনি।

দ্রুত গতিতে আফগানিস্তানের একের পর এক এলাকা দখল করে নিচ্ছে তালিবান।আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো ও আমেরিকা সেনা প্রত্যাহারের পরেই তালিবানি আগ্রাসন বৃদ্ধি পেয়েছে। সংঘর্ষে ক্রমশ পিছু হটছে আফগান বাহিনী। রাজধানী কাবুলের পতন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এমত অবস্থায় আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া সমেত অনেক দেশ আফগানিস্তানের পরস্থিতি নিয়ে লাগাতার চর্চা করছে ও তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তৎপর হয়েছে। ভারতও তাঁদের নাগরিকদের শীঘ্রই আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তালিবানের মুখপাত্র সুহেল শাহীন এদিন বলেন, ‘‘সেনার ভূমিকা বলতে আপনারা কী বলতে চাইছেন? যদি ভারতীয় সেনা আফগান সেনাকে সাহায্য করার জন্য আসে তা হলে সেটা তাদের জন্য ভাল হবে না। আফগানিস্তানে অন্য দেশের সেনাদের সঙ্গে কী হয়েছে সেটা সবাই দেখেছে। তারা এলে আগে থেকে সব জেনেই আসবে।’’

তালেবান মুখপাত্র আরও জানান, ‘আমাদের স্পষ্ট নীতি হল যে আফগান মাটি ব্যবহার করে কেউ দেশের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারবে না। তাছাড়া অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধেও আমাদের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’

দীর্ঘদিন ধরেই আফগানিস্তানের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে সাহায্য করছে ভারত। আফগানিস্তানে সালমা বাঁধ তৈরি থেকে শুরু করে পার্লামেন্ট, স্কুল, রাস্তা তৈরির জন্য প্রচুর খরচ করেছে ভারত।

আর তাই আফগানিস্তানের মানুষের জন্য ভারতের অবদানের প্রশংসাও করেছেন শাহীন। তিনি বলেন, ‘‘আফগানিস্তানের মানুষের জন্য সেতু নির্মাণ, পরিকাঠামোর উন্নতিতে অনেক সাহায্য করেছে ভারত। এতে এখানকার অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। এই ভূমিকার আমরা প্রশংসা করছি।’’

আফগান সেনা এবং তালিবানের সংঘর্ষে কূটনীতিকদের প্রাণের ঝুঁকি থাকায়, সে দেশের এম্ব্যাসি খালি করিয়ে দিয়েছে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্য দেশগুলিও ধীরে ধীরে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে। যদিও বারবার তালিবানিদের তরফ থেকে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, কূটনীতিক কিংবা এম্ব্যাসির কোনও ক্ষতি হবে না।

তিনি বলেন, ‘‘দূতাবাস ও কূটনৈতিক ব্যক্তিদের কোনও ক্ষতি আমরা করব না। আমরা তাদের নিশানা করব না। আমরা সেটা জানিয়েও দিয়েছি। ভারত তাদের নাগরিকদের জন্য যে চিন্তা করছে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা তাদের কিছু করব না।’’

গুরুদুয়ারা থেকে নিশান সাহেব সরানোর বিষয়ে এই তালিবান নেতাকে প্রশ্ন করা হলে জানান, আমরা এটা করিনি। শিখ সম্প্রদায়ের লোকেরা সেটা করেছেন। আমরা তা জানার পরে সেখানে প্রতিনিধি পাঠিয়ে আশ্বস্ত করি। পুনরায় নিশান সাহেব সেখানে স্থাপন করা হয়।

এদিকে পাকিস্তানের কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তালেবানের আঁতাত রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুহেল শাহীন বলেন, ‘এগুলো ভিত্তিহীন অভিযোগ। কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে এর কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। এগুলো আমাদের বিরুদ্ধে তৈরির নীতি অনুযায়ী ছড়ানো মিথ্যাচার। এগুলো রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার।’

Related Articles

Back to top button
error: