সঙ্গী পছন্দ করা ব্যক্তির মৌলিক অধিকার; রায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের

ছবি সৌজন্যে উইকিপিডিয়া।

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: একদিকে যখন দেশজুড়ে ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে কড়া আইন প্রণয়ন করার বিষয়ে একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি সক্রিয় হতে শুরু করেছে ঠিক সেইসময় এক হিন্দু তরুণীকে মুসলিম তরুণের বিবাহ প্রসঙ্গে এলাহাবাদ হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, কে হিন্দু কে মুসলিম তা নিয়ে আদালতের কোন মাথা ব্যাথা নেই। বিষয়টি এভাবে না দেখে বরং দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সম্পর্ক হিসেবে দেখাটাই বাঞ্ছনীয়। তাঁদের এই ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়ে নাক গলানো তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করার সমান। কে কাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেবেন সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত মৌলিক অধিকারের বিষয়।

প্রিয়াঙ্কা ওয়াংখেড়ে নামে এক হিন্দু তরুণীকে সালামত আনসারী নামে এক মুসলিম ব্যক্তি বিবাহ করার পর ওই ব্যক্তির শ্বশুরবাড়ির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় যে তাঁদের মেয়েকে ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে বিয়ে করেছেন সালামাত। এই মামলাটি হাইকোর্টে উঠলে প্রিয়াঙ্কার পরিবারের তরফ থেকে করা এফআইআর খারিজ করে দেয় আদালত। এই মামলার প্রসঙ্গেই আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, কারও ব্যক্তিগত সম্পর্কে নাক গলানোর অর্থ হচ্ছে তাদের মৌলিক অধিকারের স্বাধীনতা হরণ করা। প্রিয়াঙ্কা এবং সালামাতের বিয়ে প্রসঙ্গে আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, এই বিবাহকে আদালত হিন্দু-মুসলমানের বিবাহ হিসেবে না দেখে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক যুবক যুবতীর বিবাহ হিসেবে দেখছেন যাঁরা নিজেদের পছন্দ অনুসারে বিবাহ করেছেন এবং গত এক বছর ধরে সুখে শান্তিতে সংসার করছেন।

সম্প্রতি, হরিয়ানার এক তরুণীর হত্যার ঘটনা সামনে আসার পর ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে নতুন করে বিতর্কের আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। ওই ঘটনার কিছুদিন পরেই এলাহাবাদ হাইকোর্টে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয় শুধুমাত্র বিয়ের জন্য ধর্মান্তরণ গ্রহণযোগ্য নয়। হাইকোর্টের এই রায়ের পরে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার একে একে লাভ জিহাদ রুখতে কঠোর আইন প্রণয়নের কথা জানায়।

‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে চলতে থাকা এই বিতর্ক প্রসঙ্গে সোমবার তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান বলেন, ‘লাভ’ এবং ‘জিহাদ’ এই দুটি শব্দের অর্থ একে অপরের বিপরীত। এই দুটি শব্দ কখনোই পাশাপাশি বসতে পারে না। যদিও ভোট এলেই এই শব্দবন্ধটি বারবার ঘুরেফিরে আসে।