রাজ্য

পরপর দুটি কন্যা সন্তান হ‌ওয়াই গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে

কৌশিক সালুই, টিডিএন বাংলা, বীরভূম:– পরপর দুটি কন্যা সন্তান হওয়াই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে এক গৃহবধূকে খুন করার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ি বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের ময়ুরেশ্বর থানার বাসুদেবপুরের বেজা গ্রামে। অভিযুক্ত পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের মৃতা গৃহবধূর বাবার বাড়ির। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক। তদন্তে পুলিশ।

সমাপ্তি সাধু। বয়স ৩০ বছর। বাবার বাড়ি বীরভূমের মহম্মদ বাজার থানার পুরাতন গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মখদুম নগর। শ্বশুরবাড়ি ময়ুরেশ্বর থানার বাসুদেবপুর এর বেজা গ্রাম। প্রায় ১১ বছর আগে শিব শংকর প্রামানিক নামে এক মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকের বিয়ে হয় সমাপ্তির। গত দুই জানুয়ারি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয়। গৃহবধূর বাবার বাড়ির অভিযোগ পরপর দুটি কন্যা সন্তান হাওয়াই মেয়েকে মেরে ফেলেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রথম কন্যা সন্তানের বয়স ৯ বছর এবং দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বয়স তিন বছর। গৃহবধূ মৃত্যুকালীন ভিডিও জবানবন্দিতে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের কথা জানিয়েছেন। দ্বিতীয় কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন ব্যাপক অত্যাচার শুরু করে বলে দাবি। পুত্র সন্তান না হওয়ায় নিয়মিত মারধর করা হতো।

গত ২৬ শে ডিসেম্বর শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূ অগ্নিদগ্ধ হন। প্রথমে তাকে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে এবং পরে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। অবস্থার অবনতির বর্ধমান এ রেফার করা হয়। চিকিৎসা শুরু হয় বেসরকারি এক নার্সিং হোমে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থার আরো অবনতি হলে সেখান থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু সরকারি হাসপাতালে বেড না পাওয়ায় ফের ফিরে নিয়ে আসা হয় বর্ধমান এ। ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় রাস্তাতেই মারা যান ওই গৃহবধূ। তারপর সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গৃহবধূর মৃতদেহ ময়না তদন্ত হয়। এরপর গত ৬ জানুয়ারি ময়ূরেশ্বর থানায় গৃহবধূর দাদা পল্লব কুমার সাধু লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ননদ এবং ননদের স্বামীর বিরুদ্ধে। ওই গৃহবধূ মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মৃত গৃহবধূর দাদা পল্লব কুমার সাধু বলেন,” বোনের পরপর দুটি মেয়ে হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। ইতিমধ্যেই একদিন বোনের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। চিকিৎসা চলাকালীন প্রায় এক সপ্তাহ পর মারা যায় সে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন আমার বোন তার মৃত্যুকালীন ভিডিও জবানবন্দিতে তার ওপর অত্যাচার আর হওয়া বিষয়টি জানিয়েছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন এখন পলাতক। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।

Related Articles

Back to top button
error: