দেশ

ত্রিপুরা সফরের আগেই ছিঁড়ল অভিষেক-মমতার হোর্ডিং ,তীব্র নিন্দা তৃণমুল শিবিরের

টিডিএন বাংলা ডেস্ক : তৃণমূলের যুবরাজের ত্রিপুরায় পাড়ি দেবার আগেই ছিন্নভিন্ন হল তৃণমূলের পোস্টার। ইতিমধ্যেই ছবি দিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তীব্র নিন্দা করেছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। উল্লেখ্য, সোমবারেই ত্রিপুরায় শুরু হওয়ার কথা অভিষেকের যাত্রা। আর তার আগেই এহেন ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল।

আজই দলের কর্মসূচি খতিয়ে দেখতে ও দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে ত্রিপুরা সফরে যাওযার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেকের ত্রিপুরা পৌঁছানোর আগেই রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের বেশকিছু হোর্ডিং ও ব্যানার ছেঁড়া হল৷ যেগুলিতে অভিষেকের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও ছিল৷ গোটা ঘটনায় ত্রিপুরার তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে৷

এই ঘটনায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছেন আগরতলার তৃণমূল সভাপতি আশিষ লাল সিংহ৷ তিনি বলেন অভিষেককে স্বাগত জানাতে আগরতলা বিমানবন্দরের বাইরে বেশকিছু হোর্ডিং ও ব্যানার লাগানো হয়েছিল সেগুলিকেই ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে৷

এমনিতে প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক টিমকে হোটেলে আটকে রেখেছে ত্রিপুরা প্রশাসন৷ এর সঙ্গে জুড়েছে হোর্ডিং ছেঁড়ার ঘটনা৷ সবমিলিয়ে বেশ উত্তপ্ত ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি৷ দিনে দিনে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক কর্মসূচি বাড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস৷

গতকাল সেখানকার প্রাক্তন মন্ত্রী-সহ বেশকিছু রাজনৈতিক নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন , এদিন দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ আগরতলার একটি হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর। তার আগে বেলা ১২টায় ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেবেন তিনি৷ এই বৈঠক উপলক্ষে ত্রিপুরায় থাকা তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা ইতিমধ্যেই আগরতলা পৌঁছে গিয়েছেন। ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েন এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদার রয়েছেন এই দলে। যদিও আইপ্যাক টিমকে আটকে রাখা হোটেলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁদের।

অন্যদিকে আগরতলায় পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্য ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত। আজ অভিষেকের আগমনে যে বিপ্লবদেব সরকারের উপরে চাপ বাড়বে তাতে কোনও সন্দেহ নেই৷ এনিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “বিজেপি ত্রিপুরাতে আগে কিছু ছিল না, আমরা এবার ত্রিপুরা জয় করব তার জন্যই আমরা প্রস্তুত হচ্ছি, ত্রিপুরায় বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য একটা ভালবাসা ছিল, অভিষেক কাল যাচ্ছেন, হাওয়া উঠবে তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গেলে ঝড় উঠবে, বিপ্লব দেব আনপপুলার, সেটা আমরা ব্যবহার করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করব৷”

সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, ‘রবিবার রাতে আগরতলায়, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পোস্টার এবং আমাদের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টারগুলি সম্পূর্ণ ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। সোমবারের ইভেন্ট সম্পর্কিত পোস্টারগুলি সবই ছিড়ে ফেলা হয়েছে । রাজ্যের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব প্রদর্শন হচ্ছে। আমরা এই ধরনের প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই।’

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন, সেই নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এবার সেখানে নিজেদের জমি শক্ত করতে চলেছে তৃণমূল। পাশাপাশি ত্রিপুরায় তৃণমূলের জমি কতটা মজবুত তা দেখতে গিয়েছিল ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের ২৩ জন সদস্য। কিন্তু সেখানে কোভিড পরিস্থিতির কথা বলে হোটেলের মধ্যে ‘বন্দি’ করে রাখা হয় তাঁদের।

একটা সময় ত্রিপুরায় ঘাসফুল শিবির সামলাতেন মুকুল রায়। তারপর বিজেপি যেতেই ত্রিপুরার তৃণমূল সংগঠন দূর্বল হয়ে গেছে। এদিকে মুকুল রায় বিজেপিতে যেতেই ত্রিপুরায় তৃণমূলের অন্যতম নেতা সুদীপ রায় বর্মণও চলে যান বিজেপিতে।

তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, একাধিক রাজ্যে শীঘ্রই সংগঠন বিস্তার করতে চায় জোড়াফুল শিবির। সেই সংগঠন বিস্তারের জন্যে মুকুল রায় কাজ করতে পারেন। অপরদিকে সুদীপ রায় বর্মণের তরফে ইতিমধ্যেই ত্রিপুরাতে ‘বন্ধুর নাম ত্রিপুরা’ বলে একটি সংগঠন করেছেন। তৃণমূল চাইছে এই সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করতে। তবে তৃণমূলের নেতা সুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, সর্বত্র ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকে। রাজনীতিতে অজাত শত্রু বলে কিছু হয় না। এখন যারা বিজেপিতে থেকে ত্রিপুরায় তাঁদের বিরোধিতা করছে তাঁরা একটা সময়ে কংগ্রেসে ছিল। তারপর তৃণমূল কংগ্রেসে। ফলে চেনা জানার জমি তৈরিই আছি। তাঁদের নিয়ে আলোচনা হতে পারে।’

Related Articles

Back to top button
error: