দেশ

বাবরি মসজিদের পর হিন্দুত্ববাদীদের পরবর্তী টার্গেট জ্ঞানবাপী মসজিদ

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: বাবরি মসজিদের পর এবার উত্তরপ্রদেশের কাশী বিশ্বনাথ মন্দির সংলগ্ন জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শুরু হয়েছে উত্তেজনা। একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ এপ্রিল স্থানীয় আদালত জ্ঞানপাপী মসজিদের প্রত্নতাত্বিক জরিপের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি টিম তৈরির নির্দেশ দিয়েছে যাতে দুজন মুসলিম সদস্য থাকবে। আসলে মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়েছে কিনা জানার জন্য তারা এই মসজিদের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ করবে। আর এর খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার। স্থানীয় আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জেলা আদালতে রিভিশন পিটিশন দায়ের করেছে ‘সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড’। এই মামলা গ্রহণ করা হবে কিনা সে বিষয়ে ৯জুলাই শুনানির কথা আছে। উল্লেখ্য যে, বাবরি মসজিদ নিয়ে আন্দোলনের সময়ে আরএসএস ও হিন্দুত্ববাদীদের স্লোগান ছিল ” এহ তো সির্ফ ঝাঁকি হে, কাশী-মথুরা বাকি হে”। অর্থাৎ বাবরি মসজিদের পাশাপাশি কাশি ও মথুরার মসজিদ নিয়েও তাদের পূর্ব পরিকল্পনা ছিল। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা কাশির জ্ঞানবাপি মসজিদের ব্যাপারে প্রচারণা চালাতে শুরু করে যে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এর একটা অংশ ভেঙে নাকি এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব এর নির্দেশে নাকি মন্দিরের এ অংশে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। হিন্দুত্ববাদীদের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় আদালত ‘জ্ঞানবাপী মসজিদ’ এর ব‍্যাপারে উক্ত নির্দেশ দেয়। যদিও এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল মুসলিম নেতৃত্বরা। তারা এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে জাওয়ার কথা জানিয়ে ছিল। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে সাংসদ আসাদ উদ্দিন ওআইসি ট‍্যুইটার বার্তায় বলেন, “ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ আগেও বহু হিন্দুত্ববাদী মিথ্যার ধাত্রী হিসেবে কাজ করেছে – তাদের কাছ থেকে কোনও নিরপেক্ষতা আশা করা যায় না।” এছাড়া অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের সদস্য ও বিশিষ্ট সিনিয়র আইনজীবী জাফরইয়াব জিলানিও প্রশ্ন তুলে বলেন,  “জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে একটি মামলা যখন এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে এবং হাইকোর্ট সেখানে তাদের রায় মুলতুবি রেখেছেন, সেখানে কীভাবে সিভিল জজ এই আদেশ দিতে পারেন?   তা ছাড়া ভারতে ১৯৯১ সালে পাস হওয়া ধর্মীয় উপাসনালয় আইনেও অযোধ্যা ছাড়া দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আগে রাম মন্দির এর মত কাশি ও মথুরা মসজিদকে ইস্যু করে আরএসএস ও বিজেপি রাজনীতির ময়দান কে গরম করতে চাইছে। জনতাকে বলার মতো কোনো কাজ তারা করেনি। তাই সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে আবারও তারা ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে। এই মসজিদ মামলা কোন দিকে গড়ায় তা বোঝা যাবে ৯ তারিখে জেলা আদালতের সিদ্ধান্তের পর।

Related Articles

Back to top button
error: