HighlightNewsরাজ্য

আলিয়া ইস্যুতে পরোক্ষে আন্দোলনকারীদেরই দুষলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ!

নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা : কলকাতার জমিয়ত ভবনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় ওয়ার্কিং কমিটির দুই দিন ব্যাপী অধিবেশন। অধিবেশন শেষে আলিয়া ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ পরোক্ষে আন্দোলনকারীদেরই দুষলেন। তিনি বলেন, “ছাত্ররা যদি মনে করে যে আমরা প্রফেসর হয়ে গিয়েছি তাহলে সমস্যা তো হবেই। ছেলেরা ভাবছে আমাদের সব কথা মানতে হবে, কিন্তু বাবা মায়েরা যদি সন্তানের সব কথা শোনে তাহলে সংসার চলবে।” প্রসঙ্গত, সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছিলেন কিন্তু আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করেননি। ওয়াকফ বোর্ডের জমি বেদখল হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা এ বিষয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করছি। কিন্তু মুসলিমরা বাপের কবর বিক্রি করে দিচ্ছে, মসজিদের জমিও বিক্রি করে দিচ্ছে, ফলে দোষ কাকে দেব?”

এই অধিবেশন থেকে অভিযোগ করা হয় যে, “রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি ও উদ্দেশ্যসাধনের জন্য ধর্ম ও ধর্মীয় প্রতীকসমূহের অপব্যবহার আমাদের দেশের রাজনীতির অবমূল্যায়ন ঘটাচ্ছে। একশ্রেণির সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক নেতৃত্ব সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়কে তুষ্ট করে নিবার্চনে তাদের ভোট হাসিলের জন্য উত্তেজক স্লোগানের মাধ্যমে তাদের সমর্থনপ্রাপ্তি এবং মুসলমানদের বাস্তবিক সমস্যাগুলি আড়াল করার উদ্দেশ্যে এধরনের রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করে থাকে। মুসলমানদের উত্তেজিত করার জন্য ইসলামী কৃষ্টি-কালচার, ইসলামী মূল্যবোধ, মসজিদ, নামায এবং প্রিয় নবী (সাঃ) এর অনুপম ব্যক্তিত্বের অবমাননার ঘটনা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দেশপ্রেমিক ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সংস্থার নিকট আবেদন জানাচ্ছি যে, উগ্র ও প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি বর্জন করে একজোট হয়ে কট্টরপন্থী ও ফ্যাসিস্ট শত্তিসমূহকে সামাজিক ও রাজনৈতিক পর্যায়ে মোকাবিলা করে দেশে সম্প্রীতি-সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালান। মুসলিম উম্মাহর ছাত্র-যুব সমাজকে আমরা বিশেষ ভাবে সতর্ক করতে চাই যে, আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দেশদ্রোহী শক্তি তাদেরকে প্রত্যক্ষ লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে তাদের নিরাশ করার জন্য উত্তেজিত ও বিভ্রান্ত করে ভুল পথে পরিচালিত করার জন্য সবপ্রকার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমাদের সামনে হাজার হাজার মুসলিম যুবকদের উদাহরণ রয়েছে যাদেরকে জিহাদের নামে ধোঁকা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে অথবা সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এজন্য মুসলিম যুবকদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন যাতে তারা জিহাদের নামে ধোঁকার শিকার না হয়। সময়ের দাবি হল, আমরা আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে দেশ, জাতি তথা দ্বীনি জাগরুকতার জন্য পারস্পরিক শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক ভাবে সুস্থ তথা প্রাণ বলিদানের জন্য প্রস্তুত দেশপ্রেমী নাগরিকের উদাহরণ পেশ করে যার উপর দেশ ও জাতির গর্ব হয়। আমাদের যুবসমাজকে এমনভাবে শক্তিশালী করতে হবে যাতে তারা দেশের উপর আসা বিপদ-আপদ, বহিরাক্রমণের মোকাবিলায় প্রথম পংক্তিতে থাকে।”

এদিনের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় সভাপতি জনাব মাওলানা মাহমুদ মাদানী, সর্বভারতীয় মহাসচিব জনাব মাওলানা হাকিমুদ্দীন কাসেমী, দারুল উলূম দেওবন্দের উপাচার্য জনাব মুফতি আবুল কাসিম নোমানী, আজমের শরীফ দরগাহর পীরজাদা মাওলানা সিরাজুদ্দীন মঈনী, জনাব মাওলানা রহমতুল্লাহ মীর কোম্মীর, জনাব মুফতি সালমান মনসুরপুরী, মুফতি জাভেদ ইকবাল, জনাব মাওলানা সিদ্দীকুল্লাহ চৌধুরী, জনাব কারী মুহাম্মদ আমীন (রাজস্থান), জনাব মাওলানা সালমান বিজনৌরি উত্তরপ্রদেশ), জনাব মুফতি আহমেদ দেউলা (গুজরাত), জনাব মুফতি ইফতেখার কাসেমী (কর্ণাটক), জনাব হাজী মুহাম্মদ হাসান, জনাব মাওলানা নিয়াজ ফারুকী, জনাব মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ।

Related Articles

Back to top button
error: