দেশ

অযোধ্যা-বাবরি মামলার রায়ের সংবেদনশীলতার দরুন হাথরাসের নির্যাতিতার শব মধ্যরাতে দাহ করা হয়; শীর্ষ আদালতে জানালো উত্তরপ্রদেশ সরকার

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত কেন তড়িঘড়ি করে নির্যাতিতার শব দাহ করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তা নিয়ে মুখ খুলল যোগী সরকার। শীর্ষ আদালতে এদিন হাথরাস গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত সিবিআই-এর হাতে কিংবা প্রাক্তন বিচারপতির নিরীক্ষণে বিচারিক তদন্ত কমিটি গঠন এবং উত্তরপ্রদেশের হাত থেকে এই মামলা দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার দাবি নিয়ে দায়ের করা একটি আবেদন পত্রের শুনানি চলাকালীন মধ্যরাতে শব দাহ কান্ডের পেছনে কি কারণ রয়েছে সে বিষয়ে তথ্য দিল উত্তরপ্রদেশ সরকার।

এদিন এই মামলার শুনানি চলাকালীন উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব দাহ প্রসঙ্গে বলা হয় পুলিশের কাছে গুপ্ত সূত্র মারফত খবর ছিল যে উত্তরপ্রদেশে হিংসাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে তাই নির্যাতিতার শবের মধ্যরাত্রে অন্তিম সৎকার করা হয়। উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, অযোধ্যা-বাবরি মামলার রায়ের সংবেদনশীলতার দরুন রাত্রি অন্তিম সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরিবারের কাছ থেকে অনুমতিও নেওয়া হয়। হাথরাস কান্ডে এখনো পর্যন্ত কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে একটি হলফনামা শীর্ষ আদালতে পেশ করে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

উত্তরপ্রদেশের সরকারের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেলের জমা দেওয়া হলফনামার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের এদিন জিজ্ঞাসা করে, উত্তরপ্রদেশের কি কোন সাক্ষীদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে? নির্যাতিতার পরিবারের তরফ থেকে কি কোন উকিল নিযুক্ত করা হয়েছে? হাইকোর্টে এই মামলা কোন পর্যায়ে রয়েছে? আমরা এই সবের ভিত্তিতেই এই মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া উন্নত করার জন্য আদেশ দেব।

শীর্ষ আদালতের এই সওয়ালের জবাবে উত্তরপ্রদেশ পর সরকারের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল জানান তিনি এ বিষয়ে পরশুদিন সমস্ত নথি জমা দিয়ে দেবেন। সলিসিটর জেনারেলের উত্তরের ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত জানায়, যে তাহলে এই মামলার শুনানি আগামী সপ্তাহে করা হবে। এরপর আবেদনকারীদের উদ্দেশ্যে শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা এই মামলার গুরুত্ব বুঝি কিন্তু আপনাদের প্রথমে হাইকোর্টে যাওয়া উচিত ছিল। শীর্ষ আদালতের এই সওয়ালের উত্তরে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ বলেন,”এই মামলায় অনেক কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে। সাক্ষীদের সুরক্ষা দেওয়া হোক, আমরা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা চাইছি। এই মামলার আইনজীবী এনএএলএসএ (নালসা)-এর তরফ থেকে নিযুক্ত করা হোক।”

অপরদিকে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। উটের সরকারের পক্ষ থেকে বার করা হলফনামায় বলা হয়েছে, এই মামলায় স্বতন্ত্র এবং নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক।

উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফ থেকে এদিন আদালতে বলা হয়েছে, হাথরাসের এই অপরাধমূলক ঘটনার সূচনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এফআইআর দায়ের করে উপযুক্ত তদন্ত করতে শুরু করে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কিছু রাজনৈতিক দল এই মামলার সাহায্যে জাতিগত এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দেওয়ার প্রচেষ্টা করেছে। এই কাজের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া, কিছু প্রিন্ট এবং ডিজিটাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা হয়েছে।

Related Articles

Back to top button
error: