রাজ্য

কোভিডের টিকার পরে মৃত্যুর দায় নেবে না কেন্দ্র

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: কোভিডের টিকাকরণের পরে কারও মৃত্যু হলে তার ক্ষতিপূরণের দায় কেন্দ্র নেবে না। সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে বাধ্যতামূলক ছিল না করোনার টিকাগ্রহণ। সম্প্রতি একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। তবে, এ ধরনের ক্ষেত্রে মৃতের পরিবার ক্ষতিপূরণ চাইলে দেওয়ানি আদালতে আবেদনের পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।

প্রসঙ্গত, ভারতে চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২১৯.৮৬ কোটি টিকাকরণ হয়েছে। সরকার আদালতে জানিয়েছে, টিকাকরণের পরে শরীরে বিরূপ প্রভাবের লক্ষণ দেখা গিয়েছে ৯২,১১৪ জনের। কিন্তু, টিকা নেওয়ার পরে ঘটনাচক্রে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণের বিষয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি, কোভিশিল্ড টিকা নেওয়ার কারণে সন্তানেরা মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ করে দুই তরুণীর পরিবার কেন্দ্রের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। পরিবারের অভিযোগ, এক তরুণী টিকা নেওয়ার তিন সপ্তাহ পর থ্রম্বোসিস অ্যান্ড থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে (টিটিএস) মারা যান। উল্লেখ্য, টিকা নেওয়ার পরে বিশ্বে টিটিএস-এ আক্রান্ত হওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। তবে, পরিসংখ্যান অনুসারে ভারতে এখনও পর্যন্ত টিকা নেওয়ার পরে টিটিএস-এ আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ জন, যাঁদের মধ্যে ওই তরুণী-সহ মারা গিয়েছেন ১২ জন।
দুই তরুণীর পরিবার বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ডের নেতৃত্বে স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা গঠন ও প্রোটোকল তৈরির দাবি জানিয়েছে। ওই আবেদনের ভিত্তিতে গত বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আদালতে জানিয়েছে, করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার কারণে শরীরে কী ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে গবেষণা চলছে। ফলে টিকাকরণই ওই মৃত্যুর প্রধান কারণ, এমন বলা সম্ভব নয়। আবেদনকারীর আইনজীবী কলিন গনজ়ালভেস আদালতে জানিয়েছেন, টিকাকরণের ফলে কী ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যেতে পারে, তা টিকা নেওয়ার আগে সম্মতিপত্রে লেখা থাকলে ওই মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হত। কেন্দ্র জানিয়েছে, টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল না, তাই সম্মতিপত্রে ক্ষতিকর প্রভাবের উল্লেখের প্রয়োজন মনে করেনি সরকার।
এদিকে, লকডাউন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরে বিমানযাত্রার ক্ষেত্রে টিকা নেওয়া কার্যত বাধ্যতামূলক করেছিল একাধিক বিমানসংস্থা। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সরকারি দফতরের কর্মী, ভোটকর্মী বা শিক্ষকদের কার্যত সরকার বাধ্য করে টিকাগ্রহণ করতে। বিরোধীদের অভিযোগ, যেহেতু সরকার টিকাকরণ বাধ্যতামূলক নয় বলে নির্দেশিকা জারি করেছিল, তাই এখন সেই আইনের ফাঁক গলে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে।

Related Articles

Back to top button
error: