নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা: সামনেই নির্বাচন। প্রকাশিত হয়ে গেছে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট। তাই করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বিহারের রাস্তায় রাস্তায় তো বটেই ভার্চুয়ালিও নির্বাচনী পোস্টার পোস্ট করছে বিহারের প্রায় সবকটি রাজনৈতিক দলই। সেই রেসে বাদ যায়নি লালু প্রসাদ যাদবের দল আরজেডিও। নির্বাচনী পোস্টার এবং ছড়িয়েছে বিহারের সর্বত্র। কিন্তু আরজে নিয়ে নির্বাচনী পোস্টারের বাদ পড়েছেন লালুপ্রসাদ যাদব। প্রশ্ন উঠছে তবে কি আরজেডিতে লালুপ্রসাদ যাদবের যুগ শেষ হয়ে গেছে? নাকি লালু বনাম নীতিশের যুদ্ধ এড়াতেই এই পদক্ষেপ?
বিহারের সর্বত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেয়ে থাকা পোস্টারে আগামী নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে আরজেডির নতুন মুখ লালু যাদবের পুত্র তেজস্বী যাদব। কিন্তু যে পার্টি কে যত্ন করে বড় করেছিল লালু প্রসাদ যাদব এখন সেই পার্টিতে কি অর্বাচীন তিনি? নাকি বাবা লালুপ্রসাদের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে নিজের নতুন ছবি তৈরী করতে চান তেজস্বী যাদব? প্রশ্ন অনেক। উত্তর না থাকলেও রয়েছে কিছু সমীকরণ।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, গতবছর লোকসভা নির্বাচনের সময় প্রথমদিকে নিজেকে সমাজের সমস্ত জাতি এবং বর্গের নেতা বলে প্রচার করলেও পরে বাবা লালু প্রসাদ যাদবের পন্থায় উচ্চবর্ণের সংরক্ষণের বিরোধিতা করতে শুরু করেন। নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্ব দেয়া হয় অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া, পিছিয়ে পড়া, দলিত এবং মুসলমানদের। আর এর ফল হাতেনাতে পেয়ে যান তেজস্বী যাদব। লোকসভা ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ে আরজেডি। এর পরেই নিজের ভুল শুধরে নেন তেজস্বী যাদব। উচ্চবর্ণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেজগদানন্দ সিংহকে পার্টির প্রদেশ সভাপতি বানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।শুধু তাই নয় সম্পূর্ণ দিক থেকে এই বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয় যাতে তেজস্বী যাদবের ওপর জাতিগত রাজনীতি করার বা সমাজের একটি নির্দিষ্ট বর্গের ভিত্তিতে রাজনীতি করার ছাপ না পড়ে যায়।

দ্বিতীয় সমীকরণ অনুযায়ী, আরজেডির পোস্টারে যদি তেজস্বী যাদবের সঙ্গে লালুপ্রসাদ যাদবের মুখ সামনে আনা হয় তাহলে, নীতিশ বনাম লালুর লড়াইয়ে হারিয়ে যেতে পারেন আরজেডির নতুন মুখ তেজস্বী যাদব। শুধু তাই নয়, ওই পরিস্থিতি তৈরি হলে শাসক দল খুব সহজেই আরজেডির বিরুদ্ধে লালু-রাবরি রাজের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে জঙ্গল রাজের স্লোগান ওঠাতে শুরু করবে। সেখানে লালুপ্রসাদ যাদব, রাবড়ি দেবীর ছত্রছায়া থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে তেজস্বী যাদবকে আরজেডি নতুন মুখ, যুবা মুখ করে তোলার প্রচেষ্টা করা হয়েছে।

যদিও এ ধরনের কোন তথ্যই সরাসরি স্বীকার করতে নারাজ আরজেডি। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আর যদি এখনও লালু প্রসাদ যাদবের নীতির হাত ধরেই অগ্রসর হচ্ছে। তবে, এহেন “তেজস্বী”ময় পোস্টার দেখে আর এক সম্ভাবনার কথা মাথায় আসে। তা হল লালুপ্রসাদের সন্ন্যাস। সত্যিই কি লালুপ্রসাদ যাদব এবার রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেবেন? ঠিক যেভাবে একদিন বিজেপির নির্বাচনী পোস্টার হোর্ডিং থেকে বিদায় নেওয়ার পর সন্ন্যাস নিয়েছিলেন বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা মুরলি মনোহর জসি এবং লালকৃষ্ণ আদভানিরা?