অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত বাদল অধিবেশন; বিরোধীদের বয়কটের মাঝেই দুদিনে রাজ্যসভায় পাশ হলো শ্রম বিল সহ ১৫ টি বিল

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: নির্দিষ্ট সময়সীমার আট দিন আগেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেল সংসদের বাদল অধিবেশন। এর মধ্যেই কৃষি বিল নিয়ে রাজ্যসভায় প্রবল কোন্দলের কারণে, নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে রবিবার আট বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় বিরোধীদের বয়কট। যদিও তার মধ্যেই অর্থাৎ বিরোধীশূন্য অবস্থাতেই মাত্র দু’দিনের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধনী বিল সহ মোট ১৫টি বিল পাশ করানো হলো রাজ্যসভায়।

করোনার পরিস্থিতির মধ্যে ১৮ দিনের জন্য এবছর বাদল অধিবেশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যার মধ্যে শনিবার এবং রবিবারও সংসদের অধিবেশন জারি থাকে। টানা ১০ দিন ধরে সংসদীয় অধিবেশন চলার পর, করোনা সংক্রমনের কথা মাথায় রেখে বুধবার লোকসভা এবং রাজ্যসভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অধিবেশন স্থগিত করা হয়। করোনার কোপে পড়ে সংসদের অধিবেশন যে, নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই শেষ হয়ে যেতে পারে তা নিয়ে এক রকম কানাঘুষো চলছিল অনেকদিন ধরেই। যদিও কেন্দ্রের তরফ থেকে এই কথা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে, কৃষি বিল নিয়ে চলতে থাকা বিবাদের জেরে রবিবার রাজ্যসভায় যে প্রবল কোন্দলের সৃষ্টি হয় তার ফলে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে বিরোধীদলের আটজন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। এর প্রতিবাদে প্রথমে কংগ্রেস এবং পরে অন্যান্য বিরোধী দলের সাংসদরা একে একে বয়কট করেন উচ্চ ও নিম্ন কক্ষের সংসদীয় অধিবেশন। এতে কিছুক্ষণের জন্য বিধানসভার অধিবেশনে ব্যাঘাত ঘটলেও দুদিন ধরে চলতে থাকা বিরোধীদের বয়কটের মাঝেই সংসদীয় কক্ষে রীতিমতো বিরোধীদের অনুপস্থিতিতেই শ্রম আইন সংশোধনী বিল সহ আরো ১৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করিয়ে নেয় কেন্দ্র। এই বিল গুলির মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য নতুন শ্রম আইন সংশোধনী বিল। এই বিলের প্রতিবাদ জানিয়েছে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনগুলি।

বিরোধীদের বয়কটের মাঝেই সোমবার মোট সাতটি এবং মঙ্গলবার মোট আটটি বিল পাশ করানো হয় রাজ্যসভায়। এর মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বিতর্কিত শ্রম আইন সংশোধনী বিল। এই বিলের মাধ্যমে এবার থেকে ন্যূনতম ৩০০ জন কর্মী থাকার সংস্থা সরকারকে কোনরকম হদিশ না দিয়েই নিজেদের কর্মচারী ছাঁটাই করতে পারবে। যে কারণে এই বিলটি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন সমস্ত শ্রমিক সংগঠনগুলি। যার মধ্যে শামীম হয়েছে আরএসএস সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনগুলিও। এই বিল নিয়ে এবং বিরোধী দলগুলির অনুপস্থিতিতে বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ইতি মধ্যেই নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বলা হচ্ছে, বিরোধীদের বয়কটের ‘সুযোগে’ কোনো বিরোধিতা ছাড়াই শ্রম আইন সংশোধনী বিলের মত বিতর্কিত বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। এই বিলগুলি পাশ করানোর পরে বাদল অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, কৃষি এবং শ্রম বিল নিয়ে চাপে থাকার কারণে করোনার ‘অজুহাতে’ সংসদের অধিবেশন স্থগিত করেছে কেন্দ্র।