দেশ

দিল্লি দাঙ্গা মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বিরোধী দল নেতারা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি দাঙ্গা মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন কংগ্রেসের আহমেদ প্যাটেল, সিপিআইয়ের ডি রাজা, সিপিআই (এম) এর সীতারাম ইয়েচুরি, ডিএমকে-র কানিমোঝি এবং আরজেডির মনোজ ঝা সহ বিরোধী নেতারা।

বিরোধী নেতাদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে এ প্রসঙ্গে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে, দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি প্যানেল গঠন এর আর্জি জানানো হয়েছে।

স্মারক লিপিতে দিল্লি পুলিশের তদন্তের ওপর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিরোধী দল নেতারা লিখেছেন,দাঙ্গার সময় দিল্লি পুলিশের ভূমিকা এবং যেভাবে পুলিশ বর্তমানে বিভিন্ন সমাজকর্মী ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত তরুণ নেতাদের হেনস্থা করছে এবং তাঁদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে, তা নিয়ে একাধিক গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ‍্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাঁড়া করা হচ্ছে। সংসদীয় সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি, বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের নাম জড়ানো হয়েছে এতে। এটা অত্যন্ত বিরক্তিকর প্রবণতা এবং এতে তদন্তের পদ্ধতি প্রশ্নের‌ মুখে পড়ে।”

এরপর দাঙ্গা চলাকালীন প্রকাশ্যে আসায় একাধিক ভিডিওর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ওই স্মারক লিপিতে বিরোধী দল নেতারা জানিয়েছেন,”ভাইরাল ‌হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, দাঙ্গায় আহতরা রাস্তায় পড়ে থাকলে তাদের সাহায‍্যের পরিবর্তে লাঠি দিয়ে বারবার তাদেরকে আঘাত করছে পুলিশকে এবং আহতকে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য জোর করছে। ফৈজান নামের এক যুবক পুলিশের লাঠির আঘাত থেকে পাওয়া চোটের কারণে মারাও গেছে।”

প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়া উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গার ঘটনায় দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল বুধবার আদালতে সাড়ে ১৭ হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা করল। বিকেল চারটে নাগাদ কর্কর্দুমা কোর্টে দুটি ট্রাংকে ভরে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল ওই বিপুল পরিমাণ চার্জশিট নিয়ে আসে। তবে ওই চার্জশিট সম্পূর্ন নয়।দিল্লি দাঙ্গা মামলায় এখনো পর্যন্ত দ্রুত ২০ জন অভিযুক্তের মধ্যে শুধুমাত্র ১৫ জনের বিরুদ্ধেই তৈরি করা হয়েছে চার্জশিট। ওই চার্জশিটের মধ্যে তাহির হোসেন এবং খালিদ সৈফির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই চার্জশিটের মধ্যে মূল ষড়যন্ত্রকারী হওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া উমার খালিদ এবং শারজিল ইমামের নাম নথিভূক্ত করা নেই। এঁদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা করবে পুলিশ। প্রায় ১৭,৫০০ পৃষ্ঠার চার্জশিটে স্পেশাল সেল মোট ৭৪৭ জনকে সাক্ষী বানিয়েছে। ওই চার্জশিটের মধ্যে টেকনিক্যাল এভিডেন্স, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এবং কল ডিটেলস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে ইউএপিএ আইনের আওতায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার জন্য দিল্লির সরকার এবং কেন্দ্রের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া গেছে।

তবে, এর আগে প্রকাশ‍্যে উস্কানিমূলক বার্তা দেওয়া বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, পরবেশ বর্মা, অনুরাগ ঠাকুরের নাম নেই চার্জশিটে। পুলিশের এই ভূমিকা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

Related Articles

Back to top button
error: