দেশ

সরকার পরিচালিত সমস্ত মাদ্রাসা ও সংস্কৃত বিদ্যালয়গুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আসাম সরকারের

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: দুই বছর আগে ২০১৮ সালে বিজেপি পরিচালিত আসাম সরকার রাজ্যের মাদ্রাসা এডুকেশন বোর্ড এবং আসাম সংস্কৃত বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পর, এবার সরকার পরিচালিত মাদ্রাসা ও সংস্কৃত বিদ্যালয়গুলি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল আসাম সরকার। আসামের শিক্ষা মন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বাস শর্মা সাংবাদিক সম্মেলনে বিবৃতির মাধ্যমে এই খবর প্রকাশ করেন। ‌ তিনি জানান, “একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে জনগণের টাকা দিয়ে আমরা ধর্মশিক্ষার পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারিনা”। তিনি আরও জানান, “আগামী মাসেই বিশেষ নোটিশ জারির মাধ্যমে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সমস্ত রকম ধর্মশিক্ষার অবসান ঘটাতে চলেছে আসাম সরকার”। বর্তমানে আসামে সরকার পরিচালিত প্রায় ৬০০টি মাদ্রাসা রয়েছে এবং প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি বেসরকারি মাদ্রাসা চালু রয়েছে। ঠিক একই রকমভাবে আসামে সরকার পরিচালিত প্রায় 100 টি সংস্কৃত বিদ্যালয় এবং প্রায় ৫০০টি বেসরকারি সংস্কৃত বিদ্যালয় ও মঠ রয়েছে। আসাম সরকারের আচমকা এই ঘোষণায় সরকারি ও বেসরকারি মাদ্রাসা এবং সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়গুলি ভয়ংকরতম বিপাকের মধ্যে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বাস শর্মা খুবই স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন সরকারি ফান্ডের টাকা কোন রকম ভাবে কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে খরচ করা হবে না। তবে বেসরকারি ভাবে পরিচালিত মাদ্রাসা ও সংস্কৃত বিদ্যালয়গুলো চলতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হবে না বলেও তিনি আশ্বাস দেন। অন্যদিকে এআইডিইউএফ নেতা বদরুদ্দিন আজমাল শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার ছাত্র কৃতিত্বের সাথে পাস করে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের সাথে যুক্ত হন। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র ধর্মীয় শিক্ষার সাথে জড়িত এই ধারণা ভুল। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানগুলো ধর্মীয় শিক্ষার সাথে সাথে কারিগরি শিক্ষাও দিয়ে থাকে। এমনকি মাদ্রাসার বিশেষ পাঠ্যক্রমের সাথে রাজ্যের সাধারণ পাঠক্রমও জড়িয়ে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। একই সাথে তিনি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন নীতির ব্যাপক সমালোচনা করেন। তিনি জানান সরকার একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের মাদ্রাসাগুলি বন্ধ করতে পারেনা। দীর্ঘ দিনের পুরনো(৭০-১০০) রাজ্যের মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে তা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক কুপ্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করেন।

Related Articles

Back to top button
error: