দেশ

ঘূর্ণিঝড় যশ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করল রাজ্য

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় যশ নিয়ে রাজ্যবাসীকে আগাম সতর্ক করল নবান্ন। আগামী ৭২ ঘণ্টায় এই ঘূর্ণিঝড় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষত যারা উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাস করেন, তাদেরকে প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গতবছর আমফানের ভয়াবহ স্মৃতি এখনো রাজ্যবাসীর মনে উজ্জল। সেই ঘা এখনো শুকিয়ে উঠতে পারেনি রাজ্যের একাংশ। এরইমধ্যে রাজ্যে ফের হানা দিতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় যশ। তাই এবছর বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছে রাজ্যের সমস্ত সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকাগুলিকে।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে গতকালই বলা হয়েছে, ২২ তারিখ পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর আন্দামান সাগরে একটি প্রবল নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে। তারপর এটি ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাবে এবং ২৪ তারিখ এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার পরও এর অভিমুখ উত্তর-পশ্চিম দিকেই থাকবে এবং বঙ্গোপসাগরের ওপরেই এই ঘূর্ণিঝড় আরো শক্তি বৃদ্ধি করবে। এরপর ২৬ তারিখ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ-উড়িষ্যা উপকূলের দিকে অগ্রসর হবে। ফলে ২৫ তারিখ থেকে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী সমস্ত জেলাতেই বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর সঙ্গেই থাকবে ঝোড়ো হাওয়া। সমুদ্রের ওপর থাকাকালীন ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার থাকবে। কখনো কখনো এই গতিবেগ ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় পৌঁছে যেতে পারে। ২৫ তারিখ এই গতিবেগ আরও বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ কিলোমিটারের উপরে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। শুধু তাই নয়, উপকূলের দিকে এই ঘূর্ণিঝড় যত অগ্রসর হবে তত এই ঝড়ের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে, অর্থাৎ ২৫ তারিখ রাত থেকে এই ঝড়ের তীব্রতা আরও বাড়বে বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে সতর্ক কয়েকটি আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। এগুলি হল:

১) টিভি, রেডিও, সংবাদপত্রের নজর রাখুন ঝড়ের গতিবেগ জানবার জন্য।

২) কাঁচা বা দুর্বল বাড়িতে যারা বসবাস করেন, তাদের ঝড়ের অনেক আগে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। সাথে মূল্যবান কাগজ এবং দ্রব্য সামগ্রী নিয়ে যেতে হবে।

৩) নদীতীরে বা বাঁধের পাশে বা উপরে যারা বসবাস করেন তারা কোন নিকটবর্তী আশ্রয়স্থলে অবশ্যই চলে যাবেন কারণ ঝড় হলে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৪) নদী বাঁধ এর কোন অংশ দুর্বল মনে হলে সেচ দপ্তর, স্থানীয় পঞ্চায়েত বা ব্লক প্রশাসনের নজরে আনুন।

৫) ঘরনা গোয়া কোন মরা গাছ বা শুকনো ডাল থাকলে সেটাকে কেটে সরিয়ে ফেলতে হবে।

৬) ফ্লাড-সেন্টারে পৌঁছানোর পর বাইরে ঘোরাঘুরি করা যাবে না। ঝড় সম্পূর্ণ থেমে গেলে তবেই বের হবেন। রাতের অন্ধকারে পথ চলতে অবশ্যই টর্চ বা হারিকেন সাথে রাখতে হবে।

৭) প্রসূতি বা বিকলাঙ্গ বা জরাগ্রস্তদের ঝড়ের অনেক আগেই নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে ফেলতে হবে।

৮) রাস্তায় পড়ে থাকা কোন ছেড়া তারে হাত দেওয়া যাবে না।

৯) মাঠে পাকা বোরো ধান বা পরিণত শস্য থাকলে ঝড়ের আগেই তুলে নিতে হবে।

১০) সবজি ও অন্যান্য ফল যেগুলো ঝড়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে তা আগাম তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

১১) সমস্ত যানবাহন ও খেয়া চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে।

১২) ব্লক ও পঞ্চায়েতে ২৪×৭ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে কোন সাহায্যের প্রয়োজনে তাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

Related Articles

Back to top button
error: