দেশ

ঈদের ছুটির দিনেই কোচবিহার মাথাভাঙ্গা হাইস্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে চলছে ভর্তি প্রক্রিয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, টিডিএন বাংলা,মাথাভাঙ্গা:   পবিত্র ঈদ-উল-আযহা পালিত হল গোটা বিশ্বে। করোনা তার থাবা এখন অবধি পৃথিবী থেকে সরিয়ে নেয় নি। তার মধ্যেই ঈদ পালন ছিল খানিকটা ভিন্ন স্বাদের। এসব উৎসবের আবহ নিঃসন্দেহে প্রত্যেকটি মুসলমানের জন্য আনন্দের। কিন্তু প্রাকৃতিক বা অপ্রাকৃতিক কিছু কিছু এমন কারণ দাঁড়িয়ে যায় যার ফলে কিছু মানুষের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়।

এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা হাই স্কুলে। এটি কুচবিহারের একটি পুরনো এবং বিখ্যাত স্কুল। কয়েক বছর আগে এই স্কুল থেকেই উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম হয়েছিল। করোনার কবলে গোটা দেশ জরাজীর্ণ। সবচেয়ে বেশি করুণ অবস্থার শিক্ষাব্যবস্থার। এতটাই করুন যে আমাদের রাজ্যে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা না নিয়েই শিক্ষা দপ্তর ফলাফল প্রকাশে বাধ্য হয়। ফলে একশ শতাংশ পাশ করানো হয়েছে কিন্তু এতেই কিছু শিক্ষার্থীর মন ভারি করে বসে আছে কারণ তারা চিন্তিত যে ভালো স্কুলের শিক্ষার্থী হওয়ায় তাদের কপালে নম্বর কম। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে পারবে কিনা এই নিয়ে তাদের চিন্তা কম নয়।

এরই মধ্যে ফল প্রকাশের পরের দিনই মাথাভাঙ্গা হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় যে ২১ই জুলাই থেকে পরের মাসের ৭ তারিখ এর মধ্যেই বিজ্ঞান বিভাগের সমস্ত ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে একুশে জুলাই এবার ঈদুল আযহা।

ফলে মাথাভাঙ্গা হাই স্কুলের উপর নির্ভরশীল সিতাই, শীতলকুচি, জামালদা, নয়ারহাট ইত্যাদি দূরদূরান্ত এলাকার সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীরা ঈদের নামাজ ও সেইসঙ্গে অন্যান্য ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা থেকে নিজেকে বিরত রেখে স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, ” আমরা শুনেছি যে মাথাভাঙ্গা হাইস্কুলে একশো কুড়ি জনের বেশি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয় না। আজকের খবর নিয়ে শুনলাম যে ইতিমধ্যেই ১০০ জন ভর্তি হয়ে গেছে। আমরাতো ঈদের আনন্দে মগ্ন ছিলাম। জানতেই পারি নি। এই নিয়ে আমরা অত্যন্ত চিন্তিত।”

ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শোরগোল পড়ে যায়। অনেক শুভবুদ্ধি সম্পন্ন শিক্ষানুরাগী মানুষ বলেন যে কিভাবে একটি আন্তর্জাতিক ছুটির দিন কোন স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তি প্রক্রিয়া চালু রাখতে পারে? সোহাগ হোসেন নামে স্থানীয় এক যুবক সামাজিক মাধ্যমে লেখেন যে, “.. এরকম একটি ছুটির দিনে হঠাৎ সিট ফিলআপ করানো বিষয়টা নিশ্চিত কাম্য নয়। এবং এই স্কুলে দূরদূরান্ত সিতাই, শীতলকুচি এবং বৃহত্তর মাথাভাঙ্গা এলাকার ছাত্ররা পড়তে আসে সাধারণত। তাদের ক্ষেত্রে এই অল্প সময়ে পৌঁছানো অসম্ভব।..”

এ বিষয়ে ভূমিপুত্র উন্নয়ন মোর্চা নামের একটি বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন জানায় যে, “আমরা ইতিমধ্যে ঈদ উপলক্ষে তিন দিন ছুটি দাবি জানিয়েছি। অথচ এখানে একদিনের ছুটি মানা হচ্ছে না। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।”

তারা এই বিষয় নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কে নালিশ করলে কর্তৃপক্ষ জানায় যে আমরা আগামী মাসের সাত তারিখ পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়া চালু রাখবো। সুতরাং এখানে কাউকে বঞ্ছিত করার কোন প্রশ্নই আসে না।
তবে সূত্রের মারফত শোনা গেছে যে স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রথম দিনের এই ভর্তি বাতিল করে দেওয়া হবে।

Related Articles

Back to top button
error: