দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন হাথরাসের নির্মম গণধর্ষণের শিকার যুবতী
টিডিএন বাংলা ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের হাথরাস এলাকায় নির্মম গণধর্ষণের ঘটনার শিকার যুবতী দিল্লির সফদরজং হাসপাতলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ওই যুবতীকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর হওয়া মর্মান্তিক ধর্ষণের ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি করলে জানা গিয়েছিল, ধর্ষকরা ধর্ষণের পর তার জিভ কেটে নিয়েছিল এবং মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে দিয়েছিল। ওই যুবতী নিজের বয়ানে পুলিশের কাছে জানিয়েছিলেন, যে তাঁকে গলা টিপে মেরে ফেলার প্রচেষ্টাও করেছিল ওই দুষ্কৃতীরা।
সম্প্রতি জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক কুড়ি বছরের যুবতীকে গণধর্ষণ করে তার জিভ কেটে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই যুবতী একজন দলিত পরিবারের সদস্য এবং তাঁকে যারা ধর্ষণ করেছেন তারা সবাই তথাকথিত উচ্চবর্গের। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবতীকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তাররা জানান ওই যুবতীর শরীরে একাধিক হাড় ভাঙা অবস্থায় রয়েছে শুধু তাই নয়, তার জিভ পর্যন্ত কেটে দেওয়া হয়েছে। ওই যুবতীর অবস্থা এতটাই সংকটজনক যে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য তাকে বড় কোন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার করার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তারেরা।এরপরই ওই যুবতীকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যে অভিযুক্ত চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের মামলা দায়ের করে তাদের জেলে পাঠানো হয়েছে। তবে, ওই যুবতীর পরিবারের অভিযোগ পুলিশ প্রথমে তাদের অভিযোগ নিতে চাইনি। এমনকি অভিযোগ অনুযায়ী কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইনি। পরে ওই যুবতীর পরিবার এবং এলাকার লোকজন এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানালে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় চার দুষ্কৃতীকে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ স্বীকার করা হয়নি।
এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে ওই যুবতীর ভাই জানিয়েছিলেন, ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি তার দাদা, বোন এবং মায়ের সাথে বাজরার ক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। বেশ খানিকটা বাজরা কেটে তার দাদা আগেই বাড়ি ফিরে এসেছিলেন সেদিন। কিন্তু তখনো পর্যন্ত তার মা এবং বোন তাঁর সাথেই ওই খেতে কাজ করছিলেন। বাজরা ক্ষেতের মধ্যে খানিকটা দূরত্বে কাজ করছিলেন তার মা এবং বোন। সে সময় হঠাৎ করে চার-পাঁচজন পেছন থেকে এসে গলা থেকে ওড়না ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তাকে টানতে টানতে ক্ষেতের ভেতর নিয়ে যায়। প্রথমেই এই ঘটনা দেখতে না পেলেও খানিকক্ষণ পরে তার বোনকে খুঁজে না পাওয়া গেলে তার মা চতুর্দিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে দেন। শিশু নয় ওই যুবতীকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই যুবতীর ভাইয়ের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাঁর বোনকে গণধর্ষণ করেছিল কিন্তু পুলিশ প্রাথমিকভাবে তাদের কোন সাহায্য করতে চায়নি। ঘটনা ঘটে যাওয়ার চার পাঁচ দিন পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
অপরদিকে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়, এই মামলায় তাঁরা দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছেন। উত্তর প্রদেশে পুলিশের একটি টুইটে হাথরাসের পুলিশ অফিসার প্রকাশ কুমার একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন,”আমরা একজন অভিযুক্তকে খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করি এবং যেই আমরা অপর তিন অভিযুক্তের নাম জানতে পারি তাদেরকেও গ্রেফতার করি। আমরা এই তদন্ত খুব শীঘ্রই শেষ করব এবং সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ জেলা দায়রা আদালতের কাছে অনুরোধ করেছেন যাতে এই মামলার শুনানি ফাস্টট্রাক কোর্টে করা হয়।”