কোন কোন সাংবাদিকের ফোনে আড়ি পেতেছিল পেগাসাস, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য
![](https://bangla.tdnworld.com/wp-content/uploads/2021/07/pegsus-spyware.jpg)
টিডিএন বাংলা ডেস্ক : ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস কান পেতে ছিল বহু সাংবাদিকের ফোনে। যার ফলে ওই সাংবাদিকের খবরের সোর্স জানতে আর বেশি কষ্ট করতে হয়নি। কোন কোন সাংবাদিক ছিলেন সেই তালিকায়?
কাউকে বিপদে ফেলতে পারে, সেই খবর প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত হলে একটা সময় সাংবাদিকের থেকে খবরের সোর্স জানতে চাওয়া হতো। এখন অবশ্য তা অতীত। কারণ এখন পেগাসাসের যুগ। সাংবাদিকদের কাছে ছলে-বলে-কৌশলে তথ্য জানার আর দরকারই নেই। খেলা হবে পেগাসাসের মাধ্যমে। কারণ এই স্পাইওয়্যার শুধু মোবাইলে কান পাতছে তাই নয়। নজর দিচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপেও। আর একবার সোর্স জানতে পারা মানেই, বিপদে পড়তে পারেন ওই সাংবাদিক। সাংবাদিকদের তালিকায় নাম রয়েছে নিউজ পোর্টাল ‘দ্য ওয়ার’ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজন। বিষয়টি নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া, “অত্যাচার চলছে। এটা অবিশ্বাস্য রকমের অনধিকার চর্চা।”
ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা গেছে, বিশ্বের ১৮০ জন সাংবাদিকের ফোনে কান পাতা হয়েছিল। সেই তালিকায় রয়েছেন ভারতের ৪০ জন সাংবাদিক। ২০১৮ সালে বরদারাজনের সহকর্মী পরঞ্জয় গুহঠাকুরতার ফোনেও কান পাতা হয়েছিল। কারণ তিনি সেই সময় অনুসন্ধান করছিলেন, মোদি সরকার অনলাইনে মিথ্যে তথ্য ছড়াতে কীভাবে ফেসবুকের ব্যবহার করছিল। তালিকায় রয়েছেন ওই নিউজ পোর্টালেরই সাংবাদিক রোহিণী সিং। তার ‘অপরাধ’, তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয় শাহের ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তদন্ত মূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন। ফলে তাঁর ফোনেও পেগাসাস দিয়ে আড়িপাতা হয়েছিল। বাদ যাননি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক সুশান্ত সিং। ২০১৮ সালে রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনা নিয়ে দেশজুড়ে যখন আলোড়ন সেই সময় তার ফোনে কানপাতা হয়েছিল। ওই সাংবাদিক রাফাল নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন।
এর পাশাপাশি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, সিএনএন, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, আল জাজিরা, দ্য ইকনমিস্ট, ফিনান্সিয়াল টাইমস, রয়টার্স, ভয়েস অফ আমেরিকা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা এবং বহু ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিকের এই চরবৃত্তির শিকার। আন্তর্জাতিক সম্মানে সম্মানিত আজারবাইজানের সাংবাদিক খাদিজা ইসমাইলোভা দেশের স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের দুর্নীতির বিরুদ্ধে খবর করেছিলেন। তার ফোনেও ঢোকানো হয় পেগাসাস। তারপর তাকে সাড়ে সাত বছর জেলে থাকতে হয়। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিনাম হয়েছিল মেক্সিকোর সাংবাদিক সিসিলিও পিনেদা বারতোর। তারপরেও ফোনেও ব্যবহার করা হয়েছিল পেগাসাস। এরপর হামলাকারীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান তিনি।