বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না; ৩২ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিয়ে জানালেন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারপতি
টিডিএন বাংলা ডেস্ক: লখনৌতে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে লালকৃষ্ণ আডবানি, মুরলী মনোহর যোশী,কল্যাণ সিং, মহান্ত গোপালদাস, বিনয় কাটিয়ার ও উমা ভারতী সহ ৩২ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করা হল। বিচারক এসপি যাদব বলেছেন, বিতর্কিত বাবরি মসজিদের কাঠামো ভেঙে দেওয়ার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। হঠাৎ করেই এই ধ্বংসের ঘটনাটি ঘটেছিল। লাগাতার ২৮ বছর ধরে মামলা চলার পর সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপর্যাপ্ত প্রমাণের কথা উল্লেখ করে সমস্ত অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকরা বাবরি মসজিদের বিতর্কিত কাঠামোটি ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই ঘটনায় মোট ৪৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে এই কাঠামো ধ্বংস করেছেন। এদের মধ্যে ১৭ জন মারা গিয়েছেন। বাকি ৩২ জনের বিরুদ্ধে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের মামলা করা হয়।
এদিন রায়দানের সময় আদালত জানায়, বাবরি মসজিদের বিতর্কিত কাঠামো ধ্বংস করা একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা ছিল না। এটি হঠাৎ করে করা হয়েছিল। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই বলেও জানায় আদালত। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক জানান অডিও প্রমাণের সত্যতা যাচাই করা যায় না। সিবিআই এর তরফ থেকে যে ভিডিওটি প্রমাণ হিসেবে জমা দেওয়া হয়েছে, স্টাতে গম্বুজ এর ওপরে আরোহণকারীরা বিশৃঙ্খলাকারী বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক। এমনকি স্পিচ এর অডিও পরিষ্কার নয় বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি।
আদালত জানিয়েছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত নয় বরং হঠাৎ করে ভিড় এসে ভেঙে ফেলার ঘটনা ছিল। যে ৩২ অভিযুক্তের কথা বলা হয়েছে তারা ভিড় সামলাবার চেষ্টা করছিলেন। শুধুমাত্র ছবির ভিত্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। এর পাশাপাশি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রধান অশোক সিংহলের বিরুদ্ধেও কোন প্রমাণ নেই বলে জানায় আদালত।
এদিন লালকৃষ্ণ আদভানির আইনজীবী বলেন,”সমস্ত অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়েছে, সাক্ষ্য এতটা পর্যাপ্ত ছিল না যে কোন অভিযোগ প্রমাণ হতে পারে।”
দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে মামলা চলার পরে দিন যে ৩২ জন অভিযুক্ত বেকসুর খালাস হলেন তাঁরা হলেন,ভারতীয় জনতা পার্টির প্রবীণ নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরালি মনোহর যোশী, কল্যাণ সিং, উমা ভারতী, মহন্ত নৃত্য গোপাল দাস, সাধ্বী ঋতম্ভরা, চম্পাত রায়, বিনয় কাটিয়ার, রাম বিলাস বেদন্তী, মহন্ত ধর্ম দাস, পবন পান্ডে, ব্রজভূষণ শরণ সিং, সাক্ষী মহারাজ, সতীশ প্রধান, আরএন শ্রীবাস্তব, তত্কালীন ডিএম, জয় ভগবান গোয়েল, রামচন্দ্র খत्री, সুধীর কাক্কর, অমরনাথ গোয়েল, সন্তোষ দুবে, প্রকাশ শর্মা, জয়ভান সিং পোওয়াইয়া, ধর্মেন্দ্র সিং গুর্জার, লল্লু সিংহ, বর্তমান সংসদ সদস্য, ওম প্রকাশ পাণ্ডে, বিনয় কুমার রায়, কমলেশ ত্রিপাঠি, গান্ধী যাদব, বিজয় বাহাদুর সিং, নবীন শুক্লা, আচার্য ধর্মেন্দ্র, রামজি গুপ্ত।