দেশ

সিএএ বিরোধীদের সাহস ও মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য এই গ্রেফতার করা হচ্ছে: উমর খালিদের মা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: নাগরিক সমাজের একদল কর্মী বুধবার দিল্লি পুলিশকে অবৈধ কার্যক্রম (প্রতিরোধ) সংশোধন আইন (ইউএপিএএ) আইন, ২০১৯ এর অধীনে ছাত্র কর্মী উমর খালিদকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে এটিকে “নাগরিকত্ববিরোধী (সংশোধন) আইন (সিএএ) ২০১৯-র প্রতিবাদের অনুসন্ধান” হিসাবে অভিহিত করেছে এবং”তরুণ মনের বিরুদ্ধে জাদুকরী শিকার”হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়া উত্তর-পূর্ব দিল্লি দাঙ্গায় প্ররোচনা দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত করে উমর খালিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দিল্লি দাঙ্গার ওই ঘটনায় সরকারি নথি অনুসারে ৫৩ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ও ৪০০ জন গুরুতর আহত হয়েছিলেন।

এদিন দিল্লি প্রেসক্লাবে আয়োজিত একটি সাংবাদিক সম্মেলনে দিল্লি দাঙ্গার ওই ঘটনার সঙ্গে উমর খালিদকে যুক্ত করে গ্রেফতারির পদক্ষেপের তীব্র বিরোধীতা করতে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য সৈয়দা হামিদ, সুপ্রিম কোর্টের বড়িষ্ঠ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী –লেনিনবাদী) লিবারেশন তথা সিপিআই (এমএল) নেতা কবিতা কৃষ্ণান, প্রবীণ সাংবাদিক পামেলা ফিলিপোজ এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ডুটা)-র সভাপতি নন্দিতা নারায়ণ। উপস্থিত ছিলেন জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতা ধৃত উমর খালিদের মা।

উমর খালিদের মা এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বলেন,”এই গ্রেফতার করা হচ্ছে, সিএএ বিরোধীদের সাহস এবং মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য, যাদের সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস রয়েছে। যদি তারা মনে করেন যে তারা জয়ী হয়েছেন তাহলে তারা খুব ভুল করছেন।”

কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (সিপিআই)-র নেতা কানহাইয়া কুমারেরও এদিনের সভায় বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। ২০১৬ সালে উমর খালিদের সঙ্গে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হন। তিনি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। ওই বিবৃতিতে কানাইয়া কুমার বলেছেন,”দিল্লির দাঙ্গার তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে হবে কারণ এই তদন্তের উদ্দেশ্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা নয় বরং রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়া।” তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সেই সমস্ত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানিয়েছেন, যারা এই “দাঙ্গা উস্কে দিয়েছিল”।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উমর খালিদের মা ও নাগরিক সমাজকর্মী হর্ষ মান্দার সহ সমাবেশে উপস্থিত ব্যক্তিরা সংহতি প্রকাশের জন্য গ্রেপ্তার হওয়া অন্যান্য ছাত্র-কর্মীদের নামাঙ্কিত মাস্ক পরেছিলেন এবং তাদের নামের ফলকও হতে ধরে রেখেছিলেন। আয়োজকরা খালিদের গ্রেফতারের ঠিক আগে রেকর্ড করা একটি ভিডিও দেখান। যেখানে ওমর খালিদ বলেছেন,”এই ভিডিওটা আপনারা দেখছেন তার মানে আমায় গ্রেফতার করা হয়ে গেছে।” ওই ভিডিওতে তিনি অভিযোগ করেছেন,”আমি একটি ১৭ মিনিটের বক্তৃতা দিয়েছিলাম, যার মধ্যে ২০-৩০ সেকেন্ড ভাইরাল করে বলা হয় যে, আমি উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গায় ষড়যন্ত্র করেছি। যে অংশে আমি অহিংসা সত্যাগ্রহ এবং গান্ধীজীর কথা বলেছি তা শোনানো হয়নি। যারাই বিরুদ্ধে কথা বলেছিল তাদের কারাগারে আটকানো হচ্ছে তবে সবার কাছে আমার বার্তা হ’ল যে কেউ ভয় পাবেননা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন”।

Related Articles

Back to top button
error: