দেশ

ইনসাফ না পাওয়া পর্যন্ত চলবে এই লড়াই; নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানালেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত হাথরাসের নির্যাতিতার পরিবার পৌঁছতে পারলে নে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এদিন সন্ধ্যেবেলা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে একান্ত একটি বদ্ধ ঘরে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে কথাবার্তা বলেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। রাহুল গান্ধী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গেই ঘরে উপস্থিত ছিলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার পর নির্যাতিতার মাকে আলিঙ্গন করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। জানতে চান তার যন্ত্রণার কথা। নির্যাতিতার বাড়ির বাইরে করা সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিন নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাহুল গান্ধী জিজ্ঞাসা করেন তারা নেয় মিলবে বলে কি মনে করেন? এই প্রশ্নের উত্তরে নির্যাতিতার মা বলেন, আপনি আমাদের ন্যায় পাইয়ে দিন।

পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার পর গণমাধ্যমের সামনে এসে রাহুল গান্ধী বলেন,”আমরা এই দুঃখের সময় নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে রয়েছি। সরকার এদের ভয় দেখাচ্ছে, শাসাচ্ছে। এদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। এদের সুরক্ষা দিতে উত্তরপ্রদেশ সরকার ফেল করেছে। এদেরকে শাসিয়ে কাগজের ওপর সই করানো হয়েছে।”

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন,”নির্যাতিতার পরিবার বিচারিক তদন্ত চায়। পরিবারের সদস্যরা মেয়ের মুখ পর্যন্ত দেখতে পাননি। নির্যাতিতার পরিবারকে ইনসাফ দেওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে।”

এর আগে বৃহস্পতিবারও নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসতে চান রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। দিল্লি থেকে নয়ডা পৌঁছানোর পরেই তাদের গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। এরপর পায়ে হেঁটেই হাথরাসের দিকে রওনা হন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। কিছু দূর অগ্রসর হবার পর ফের তাদের বাধা দেয় পুলিশ। এক পুলিশকর্মী রাহুল গান্ধীকে ধাক্কাও দেন। যার জেরে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এরপর রাহুল গান্ধীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের গাড়ি করে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে যাওয়া হয়।জানা গেছে, গ্রেফতার করার আগে পুলিশের সাথে রাহুল গান্ধীর বচসা হয়।রাহুল গান্ধী জিজ্ঞাসা করেন তাকে কোন ধারায় গ্রেফতার করা হচ্ছে? একা যাওয়া কিভাবে ১৪৪ ধারার উলংঘন করা হয়? এই প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মীরা তাকে জানান ধারা ১৮৮-র আওতায় তাকে আটক করা হচ্ছে।

এরপরে শুক্রবার গোটা দিন ধরে হাথরাসের সীমানা জুড়ে এক দুর্ভেদ্য দুর্গ তৈরি করে রাখে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। রাজনৈতিক মেয়েটা তো বটেই, সংবাদমাধ্যমকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।বারংবার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সংবাদমাধ্যম সাক্ষাৎ করতে চাইলেও পুলিশ তাদেরকে বাধা দিতে থাকে। এরপর এদিন সকালে রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আগেই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উত্তর প্রদেশ পুলিশের ডিজি হিতেশ অবস্তি এবং রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব অবিনাশ অবস্তি। পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর ডিজিপি হিতেশ অবস্তি বলেন,”আমরা বুঝতে চাইছিলাম যে কেন পরিস্থিতি এভাবে উত্তোলিত হচ্ছে এবং কেন তাদের ক্ষোভের সঠিকভাবে নিরসন করা হচ্ছে না।”

এরপর পরিবারের তরফ যে, আদালতের নিরীক্ষণে তদন্তের দাবি করা হয়েছে সে প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,”আমরা তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি এবং উত্তর প্রদেশে পুলিশের ওপর ভরসা রাখতে বলেছি।”

অপরদিকে, রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব অবিনাশ অবস্তি বলেন,”আমরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি যে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সিট ঘটনার তদন্ত করছে। পরিবারের সদস্যদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে।”

Related Articles

Back to top button
error: