দেশ

Tripura: ভোট ভাগা ভাগিতেই কি ‘নিরঙ্কুশ’ জয় বিজেপির

টিডিএন বাংলা ডেস্কঃ ত্রিপুরা পুরভোটে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করেছে বিজেপি। মোট ১৩টি পৌরসভাতে ২২২টি ওয়ার্ডে পুরনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২১৭টিতে বিজয়ী হয়েছে বিজেপি। যা আসার থেকেও অনেক বেশি। স্বাভাবিক ভাবে এটাকে ‘গেরুয়া ঝড়’ মনে হলেও অনেকে কিন্তু এটাকে অন্য ভাবে দেখতে চাইছেন। এই নির্বাচনে সন্ত্রাস করা হয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন। অথচ সেই নির্বাচনেও বেশ কিছু জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেসের মোট প্রাপ্ত ভোট বিজেপির প্রাপ্ত ভোট অপেক্ষা বেশি। ওয়ার্ডভিত্তিক যদি পরিসংখ্যান দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে পুর নিগম, পুর পরিষদ এবং নগর পঞ্চায়েত মিলিয়ে প্রায় ৪০টি আসন এমন আছে, যেখানে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট সিপিএম ও তৃণমূলের মোট ভোটের চেয়ে কম। পুরভোট যদি সুষ্ঠু ভাবে হত তা হলে বিরোধীরা আরও অনেক বেশি আসনে একক ভাবেই জিততে পারতো বলে দাবি করেছেন তারা।

আগরতলা পুরভোটে বিজেপি ৫১-০ তে বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু সেখানকার ১৬টি ওয়ার্ডে সিপিএম ও তৃণমূল উভয়ের মিলিত ভোট বিজেপির চেয়ে বেশি। অর্থাৎ একটা বিষয় স্পষ্ট যদি সেখানে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি না হতো বা বিরোধী জোট থাকতো তাহলে সেখানে তারা বিজয়ী হতে পারতো। বেরোলে সোনামুড়া নগর পঞ্চায়েতের চারটি, খোয়াই পুরসভার চারটি, তেলিয়ামুড়া পুর পরিষদের চারটি বা আমবাসা পুরসভার ১৫টির মধ্যে ৮টি ওয়ার্ডেই দেখা গিয়েছে সিপিএম ও তৃণমূল মিলিত ভোট বিজেপির চেয়ে বেশি। আমবাসায় একটি করে ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে তৃণমূল এবং সিপিএম। এই পুরভোটে মোট ১৫৮টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে আছে বাম শিবির। অন‍্যদিকে তৃণমূল ৫৯টি আসনে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে।

বিজেপি বরাবরই ভোট ভাগাভাগির নির্বাচনী পাটিগণিতেই আস্থাশীল। এই ভোটেও তারা সেই অঙ্কের সূত্রেই সফলতা পেয়েছে। ত্রিপুরার পুরভোটের উল্লেখযোগ্য তথ্য হচ্ছে এই পুরভোটে কংগ্রেসের ভোট কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২%-এ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেসের ভোটেই মূলত তৃণমূল এ বার ত্রিপুরায় জমি প্রতিষ্ঠা করেছে। অন্য দিকে, লোকসভার থেকে প্রায় ২% ভোট বেড়েছে বাম শিবিরের। যদিও এই পুরভোটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তৃণমূলের ১৬.৩৯% ভোট পাওয়া। তারা ১ টি মাত্র আসন পেলেও এই ভোট তাদের আশা জাগিয়েছে বলে মত তৃণমূল কংগ্রেসের।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমরা জোর গলায় বলছি, ভোটে বিজেপি রিগিং-ছাপ্পা, জুলুম না করলে বেশ কিছু জায়গায় তারা বোর্ড গড়ার জায়গায় পৌঁছত না! আমরা আরও ওয়ার্ডে জিততাম, বামপন্থীরাও আরও ওয়ার্ড পেত।’’ আগরতলার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী বিজেপি প্রার্থী দীপক মজুমদার বলেন, ‘‘তৃণমূলের এখানে কোনও নিজস্ব শক্তি ছিল না। ওরা কোথাও বাম ভোট ভেঙেছে, কংগ্রেসের ভোট অনেকটাই টেনে নিয়েছে। তাতে আমাদের কোনও ক্ষতি হয়নি।’’

অন‍্যদিকে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পবিত্র কর বলেন, ‘‘এই ভাগাভাগিটা মূলত হয়েছে অ-বাম ভোটের। কংগ্রেসের ভোট অনেকটাই তৃণমূল পেয়েছে। আবার বিজেপির একটা অংশের ভোটও ওদের পক্ষে গিয়েছে। বনমালীপুর তার উদাহরণ, ওখানে তৃণমূলের লোকজন বা এজেন্ট কিছুই ছিল না।’’

Related Articles

Back to top button
error: