টিভি মিডিয়ার কাছে টিআরপি-টাই মুখ্য; সুদর্ষণ টিভি মামলায় বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমগুলোকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট
টিডিএন বাংলা ডেস্ক: মঙ্গলবার সুদর্শন টিভি মামলা প্রসঙ্গে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম গুলিকে রীতিমত ভৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। ইউপিএসসি মত সরকারি চাকরির পরীক্ষায় মুসলিম অনুপ্রবেশ কেন ঘটছে সেই নিয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল সুদর্শন টিভিতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হবার কথা ছিল, যার প্রোমো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখানো হয়। এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত আপাতত সুদর্শন টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোন একটি জাতিকে বা সম্প্রদায় কে বিশেষভাবে নিশানা করা যাবে না।
মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, কোন একটি সম্প্রদায় কে নিশানা করে তার মানহানি করা বা কোন একজনের ভাবমূর্তি নষ্ট করার পেছনে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমগুলির সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের সমস্যা হল শুধুমাত্র টিআরপি। যার ফলে উত্তেজনা প্রবণ এবং স্পর্শকাতর খবরের খোঁজ অনেক সময়ই মানহানির পর্যায় চলে যায়। এদিন দেশের পাঁচ জন বিশিষ্ট নাগরিকের তৈরি প্যানেল সংবাদমাধ্যমের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তোলে। যার জবাবে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার তরফে বলা হয়, সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এই জবাবে মটু সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। রীতিমতো কটাক্ষ করে তিনি বলেন,”তাই নাকি, এতই যদি সবকিছু গুণমান নিয়ন্ত্রিত থাকতো, তাহলে আমরা প্রতিদিন টিভিতে যা দেখি তা দেখতে হতো না।” শুধু তাই নয় বিচারপতির চন্দ্রচূড় প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকে প্রশ্ন করেন,”সঞ্চালকের ক্ষোভ ছিল যে, একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রার্থীরা সরকারি চাকরিতে সুযোগ পাচ্ছে। কতটা প্রতারণাপূর্ণ এটা? এধরনের প্রতারণাপূর্ণ মন্তব্য, ইউপিএসসি পরীক্ষার উপর প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে। কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এধরনের অভিযোগকে আপনারা কীভাবে অনুমতি দেন। কোনও মুক্ত সমাজে কি এধরনের অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হওয়া উচিত? ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মানহানি হচ্ছে। এটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রাষ্ট্র এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।”
এরপর সুদর্শন টিভির পক্ষ থেকে নিযুক্ত আইনজীবী শ্যাম বিওয়ান এর উদ্দেশ্যে শীর্ষ আদালত জানায়, ভারত যে বিভিন্ন ভাষা এবং সংস্কৃতির মিলিত দেশ তা আপনার মক্কেল মানতে পারেননি। তাঁকে নিজের ভাব প্রকাশের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বিচারপতি এম কে জোসেফ জানান, বৈদ্যুতিন গণমাধ্যমগুলির সম্পূর্ণ মালিকানা খতিয়ে দেখা উচিত এবং তাদের কোম্পানির বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সোশ্যাল সাইটে উপলব্ধ রাখা উচিত যাতে জনসাধারণ সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারেন।