শ্বশুর শাশুড়ির বাড়িতেও রয়েছে মহিলাদের আশ্রয়ের অধিকার; “শেয়ার্ড হাউজহোল্ড”-এর সংজ্ঞাকে সম্প্রসারিত করল সুপ্রিম কোর্ট

টিডিএন বাংলা ডেস্ক: গার্হস্থ্য হিংসার মামলায় ভারতীয় আইনের বিধি অনুসারে একজন মহিলার শ্বশুর বাড়িতেও আশ্রয় নেবার অধিকার রয়েছে। আশ্রয়ের জন্য আবেদন করার সময় তিনি সেই বাড়িতে থাকতেননা বলে তার আশ্রয়ের অধিকারকে অস্বীকার করা যায় না। এমনকি স্বামীর যে কোন আত্মীয়র বাড়িতে, যেখানে এর আগে ওই মহিলা নিজের বাড়ির মতনই বসবাস করেছেন সেখানে তার আশ্রয়ের অধিকার রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী ওই পরিসরকে “শেয়ার্ড হাউজহোল্ড” বা “ভাগাভাগি পরিবার” হিসেবে গণ্য করা হবে।

ভারতীয় সংবিধানের গার্হস্থ্য হিংসা আইন ২০০৫ অনুযায়ী, যে কোন মহিলাকে আশ্রয়ের অধিকার দেওয়া হয়েছে। ধারা ২(এস) দ্বারা যেকোনো বিবাহিত মহিলাকে তাঁর স্বামীর যেকোনো শেয়ার্ড হাউজহোল্ড অর্থাৎ ভাগাভাগি পরিবারে আশ্রয় পাবার অধিকার দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২০০৬ সালে “এস আর বাত্রা বনাম তরুণা বাত্রা”মামলায় রায় ঘোষণার সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস বি সিনহা এবং মার্কণ্ডেয় কাটজুর বেঞ্চ এই শেয়ার্ড হাউজহোল্ড-এর সংজ্ঞাকে সীমাবদ্ধ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, যে বাড়িতে বর্তমানে ওই মহিলা বসবাস করছেন কিংবা জি বাড়ি তার স্বামীর নিজস্ব বাড়ি বা ভাড়া বাড়ি বা একান্নবর্তী পরিবারে যেখানে তার স্বামীর অধিকার রয়েছে তাকেই শেয়ার্ড হাউজহোল্ড বলা হবে। একমাত্র সেই পরিসরেই একজন মহিলা আশ্রয়ের দাবি করতে পারেন। সেসময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে একজন মহিলার আশ্রয়ের অধিকার তার স্বামীর ওপর বর্তায় স্বামীর বাবা মায়ের ওপর নয়। একজন মহিলা তার স্বামীর যে বাড়িতে অধিকার রয়েছে সেখানে আশ্রয় দাবি করতে পারে কিন্তু ওই মহিলা কোনোভাবেই তার শশুর শাশুড়ি যে বাড়ির মালিক সেই বাড়িতে আশ্রয় অধিকার দাবি করতে পারেন না।

এদিন ২০০০৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের শেয়ার্ড হাউজহোল্ড-এর এই পরিভাষাকে বদলে “শেয়ার্ড হাউজহোল্ড”-এর সংজ্ঞার সম্প্রসারণ করল বিচারপতি অশোক ভূষণ, আর সুভাষ রেড্ডি এবং এম আর শাহের বেঞ্চ। এদিন শীর্ষ আদালতের এই তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, একজন মহিলা তার স্বামীর যে কোন আত্মীয়ের বাড়িতে, যেখানে এর আগে কখনো তিনি নিজের ঘরের মতো বসবাস করেছেন সেখানে আশ্রয়ের অধিকার দাবি করতে পারেন। সেই বাড়িতে “শেয়ার্ড হাউজহোল্ড” মেনে নেওয়া হবে। অর্থাৎ এখন থেকে শ্বশুর শ্বাশুড়ীর বাড়ীতে আগে বসবাসকারী কোন মহিলাকে এই যুক্তিতে আশ্রয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না যে আবেদন করার সময় তিনি সংশ্লিষ্ট বাড়িতে থাকতেন না কিংবা ওই বাড়িতে তার স্বামীর মালিকানা নেই।